উত্তরের ৫ জেলায় ১ কোটি ৩ লাখ কেজি চা উৎপাদন
- Dr. Mohammad Shameem Al Mamun
- Apr 12
- 2 min read
করোনা মহামারির মধ্যেও এ বছর রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদিত হয়েছে পঞ্চগড়সহ উত্তরবঙ্গের ৫ জেলায়। এখানকার সমতলের ১০টি চা বাগান ও ৭ হাজারের বেশি ক্ষুদ্রায়তন চা চাষীর চা বাগান থেকে ১ কোটি ৩ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। এর ফলে উত্তরবঙ্গ এখন চা উৎপাদনে দ্বিতীয় অঞ্চলে পরিণত হয়েছে। পঞ্চগড় আঞ্চলিক চা বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে রোববার সংবাদ সম্মেলনে নর্দান বাংলাদেশ প্রকল্পের পরিচালক ও ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ শামীম আল মামুন এ তথ্য জানান।
করোনা মহামারির মধ্যেও এ বছর রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদিত হয়েছে পঞ্চগড়সহ উত্তরবঙ্গের ৫ জেলায়। এখানকার সমতলের ১০টি চা বাগান ও ৭ হাজারের বেশি ক্ষুদ্রায়তন চা চাষীর চা বাগান থেকে ১ কোটি ৩ লাখ কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। এর ফলে উত্তরবঙ্গ এখন চা উৎপাদনে দ্বিতীয় অঞ্চলে পরিণত হয়েছে। পঞ্চগড় আঞ্চলিক চা বোর্ডের সম্মেলন কক্ষে রোববার সংবাদ সম্মেলনে নর্দান বাংলাদেশ প্রকল্পের পরিচালক ও ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ শামীম আল মামুন এ তথ্য জানান। ড. শামীম বলেন, চা উৎপাদনে সিলেটের পরেই পঞ্চগড়। চট্টগ্রাম এখন তৃতীয় চা উৎপাদন জেলা। এ বছর চায়ের জাতীয় উৎপাদন হয়েছে ৮ কোটি ৬০ লাখ ৩৯ হাজার কেজি। এর মধ্যে উত্তরাঞ্চলের সমতলের চা বাগানের অংশগ্রহণ ১১ দশমিক ৯২ শতাংশ।
এ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বলেন, ২০২০ সালে পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলার ১০টি নিবন্ধিত ও ১৭টি অনিবন্ধিত চা বাগান এবং ৭ হাজার ৩১০টি ক্ষুদ্রায়তন চা বাগানে (নিবন্ধিত ১,৫১০টি) মোট ১০,১৭০ দশমিক ৫৭ একর জমিতে চা চাষ হয়েছে। এসব চা বাগান থেকে ২০২০ সালে ৫ কোটি ১২ লাখ ৮৩ হাজার ৩৮৬ কেজি সবুজ চা পাতা তোলা হয়েছে। যা থেকে পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও-এর ১৮টি চা কারখানায় ১ কোটি ৩ লাখ কেজি চা উৎপন্ন হয়েছে। বিগত বছরের তুলনায় ২০২০ সালে ১ হাজার ৪৮৯ দশমিক ৮৯ একর জমিতে চা আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে ও ৭ লাখ ১১ হাজার কেজি চা বেশি উৎপন্ন হয়েছে। এর মধ্যে পঞ্চগড় জেলায় ক্ষুদ্রায়তন নিবন্ধিত ৯৯৮টি, অনিবন্ধিত ৫ হাজার ৫০০টি, চা বাগান ৯টি, অনিবন্ধিত ১৬টিতে আট হাজার ৬৪২ একর জমিতে চার কোটি ৬০ লাখ ৫১ হাজার ১৭৬ কেজি সবুজ চা পাতা থেকে ৯৮ লাখ ৯৭ হাজার ৭০ কেজি তৈরি চা উৎপাদন হয়েছে। ঠাকুরগাঁও জেলায় ক্ষুদ্রায়তন নিবন্ধিত ৩৫৭টি, অনিবন্ধিত ৩০০টি, চা বাগান নিবন্ধিত ১টি, অনিবন্ধিত একটিতে এক হাজার ২৯৩ একর জমিতে ৪৫ লাখ, ২৫ হাজার ৫০০ কেজি সবুজ চা পাতা থেকে চার লাখ ১৩ হাজার ৩৪০ কেজি তৈরি চা উৎপাদন হয়েছে। লালমনিরহাট, নীলফামারী ও দিনাজপুর জেলায় নিবন্ধিত ১৫৫ চাষি ২৩৫ দশমিক ৫৭ একর জমিতে সাত লাখ ছয় হাজার ৭১০ কেজি সবুজ চা পাতা উৎপাদন হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উন্নয়ন কর্মকর্তা আমির হোসেন, খামার তত্ত্বাবধায়ক ছায়েদুল হক, চা কারখানার মালিক জাহেদুল হক বক্তব্য দেন। এছাড়া বাংলাদেশ স্মল টি গার্ডেন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আমিরুল হক খোকন এবং ক্ষুদ্র চা চাষি মতিয়ার রহমান ও আনিসুজ্জামান পঞ্চগড়ে অকশন মার্কেট চালু, চা পাতার ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি, সেচ সুবিধা ও সার সরবরাহ নিশ্চিত করার দাবি জানান। তারা বলেন, এসব নিশ্চিত হলে চায়ের চাষ ও উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।
ড. শামীম আরও জানান, সমতল ভূমিতে চা চাষের জন্য পঞ্চগড় ও এর পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো অত্যন্ত সম্ভাবনাময় এলাকা। চাষিদের স্বল্পমূল্যে উন্নত জাতের চারা সরবরাহ করা হচ্ছে। বিভিন্ন এলাকায় ‘ক্যামেলিয়া খোলা আকাশ স্কুলে’ হাতে কলমে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিভিন্ন সমস্যার সমাধান দিতে ‘দুটি পাতা একটি কুঁড়ি’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপস চালু করা হয়েছে। এ আঞ্চলিক কার্যালয়ে একটি পেস্ট ম্যানেজমেন্ট ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া পাতার দাম ভালো পাওয়ায় নতুন নতুন চা আবাদিও বাড়ছে। এতে একদিকে দারিদ্র্য বিমোচন ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন হয়েছে, অন্যদিকে প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে।
সূত্র : দৈনিক যুগান্তর
Comments