top of page
Search

স্বাস্থ্যরক্ষায় চা!!!

  • Writer: Dr. Mohammad Shameem Al Mamun
    Dr. Mohammad Shameem Al Mamun
  • Apr 12
  • 2 min read

চা বর্তমান বিশ্বের সর্বাধিক জনপ্রিয়, নিরাপদ ও প্রাকৃতিক পানীয়। সকাল কিংবা বিকেলে এক কাপ ধূমায়িত চা না হলে যেন দিনই কাটে না। তাই শরীর ও মনকে চাঙ্গা করতে চাই এক কাপ ধূমায়িত চা। এখন এই এক কাপ ধোঁয়া ওঠা চা কি শুধুই অভ্যাসবশত কিংবা স্বাদের জন্য খাওয়া? নাকি এর স্বাস্থ্য উপকারিতাও আছে? চলুন জেনে নেই। চীন দেশের লোকেরা খ্রিস্টের জন্মের দু’হাজার বছর আগে থেকেই চা এর সবুজ তরতাজা পাতাকে জলে সেদ্ধ করে ওষুধ হিসেবে পান করতেন। তারই সূত্রধরে আধুনিক এ সভ্যতার যুগে গবেষণায় বেরিয়ে আসছে চায়ের নানা অজানা তথ্য। দেশ বিদেশের বিভিন্ন গবেষণায়ও বেরিয়ে আসছে চায়ের স্বাস্থ্যগত নানাদিক। চায়ের অন্যতম উপাদান হলো ক্যাফেইন ও পলিফেনেল। এক কাপ চায়ে ৬৪ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন থাকে। ক্যাফেইন কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে উজ্জীবিত করে। ফলে শরীর ও মন চাঙ্গা হয়। এটি মানসিক সচেতনতা বৃদ্ধি করে, অবসাদ, ক্লান্তি দূর করে ও শরীরের রক্ত সঞ্চালনকে উন্নত করে। পলিফেনল মূলত ক্যাটেচিন, থিয়াফ্লাভিন, থিয়ারুবিজিন ও অন্যান্য ফ্লাভোনয়েডের সমন্বয়ে গঠিত জৈব-রাসায়নিক উপাদান। চায়ের পলিফেনলই মূলত এন্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে, ২ কাপ চা’তে বিদ্যমান এন্টি-অক্সিডেন্টের পরিমাণ ৭ গ্লাস কমলার রস অথবা ২০ গ্লাস আপেলের রসে বিদ্যমান এন্টি-অক্সিডেন্টের সমান। এক কাপ চায়ে ১২৮ মিলিগ্রাম পলিফেনল থাকে। চায়ের মূল উপাদানের ৪০ ভাগই পলিফেনল। চায়ের পলিফেনল তথা ফ্লাভোনয়েড এন্টি-অক্সিডেন্টের অন্যতম উৎস। এটি শরীরের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে। হৃচায়ে বিদ্যমান ক্যাটেকিন ক্যান্সার সৃষ্টিতে বাঁধা দেয়। নিয়মিত চা পানে ব্লাড, ফুসফুস ও ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়। চায়ের ফ্লাভোনয়েড ও মাইরিসেটিন কৃত্রিম ইনসুলিন হিসেবে কাজ করে রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণ করে। অর্থাৎ চা ডায়াবেটিস রোগ নিয়ন্ত্রণে সহায়ক। চায়ে পলিফেনল ও থায়াফ্লোবিন রয়েছে যা ভাইরাসকে নিষ্ক্রিয় করতে সাহায্য করে। কয়েক বছর আগে এক গবেষণায় দেখা গেছে, চায়ের মধ্যে ট্যানিন নামের যে উপাদান রয়েছে, তা খাদ্যনালির (গলার) ক্যানসারের একটি কারণ হতে পারে। আর চুলায় চা পাতা ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্বাল দিলে চায়ের ট্যানিন বেশি বের হয়। সাধারণ চায়ের দোকানে এ রকম করা হয়। এই চায়ে কিছু দুধ দরকার। কারণ, দুধ চায়ের ট্যানিনকে আঁকড়ে ধরে এবং তাকে শরীরে মিশতে দেয় না। এ জন্য বেশি জ্বালের চায়ের ক্ষেত্রে দুধ মেশালে উপকার পাওয়া যেতে পারে। আর সাম্প্রতিক গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, হালকা জ্বালের রং চা-ই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। চা দাঁতের স্বাস্থ্য রক্ষার উপাদান ফ্লোরাইডের অন্যতম প্রাকৃতিক উৎস। এক কাপ চায়ে এক মিলিগ্রাম ফ্লোরাইড থাকে। চা মুখের ক্ষতিকর স্ট্রেপটোকক্কাস নামক ব্যাকটেরিয়া ও ক্যানডিডা নামক ছত্রাক কমাতে সাহায্য করে। অর্থাৎ চা মুখের স্বাস্থ্য রক্ষায়ও বিশেষ ভূমিকা পালন করে। চা শরীরের বার্ধক্য রোগ প্রতিরোধ করে মানবদেহের উন্নতি সাধন করে থাকে। সবুজ চায়ের ইপিগ্যালোক্যাটেচিন গ্যালেট এইডস রোগের জীবাণু এইচআইভি বাইন্ডিং এ বাধা প্রদান করে। তাই বলা যায় যে, নিয়মিত চা পানে মানবদেহের গুরুত্বপূর্ণ রোগসমুহ নিয়ন্ত্রণে থাকে ও জীবনের মান উন্নয়ন হয়। তাই এই গুরুত্বপূর্ণ পানীয় চা ছাড়া যেন আমাদের দিনই কাটেনা। চা এখন আমাদের নিত্য সঙ্গী যা চাঙ্গা করে শরীর ও মন দু’টিই। এক কাপ চা ই হোক ভালবাসার অনন্য প্রতীক। চা দীর্ঘজীবি হউক...

 
 
 

Comments


Copyright ©2025 Mohammad Shameem Al Mamun

bottom of page